Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : অদ্যাপীঠ, ২৬ আগস্ট ২০২৪। বাংলার অতি জনপ্রিয় তীর্থস্থান গুলোর অন্যতম আদ্যাপীঠ মন্দির । এখানে রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র। দেবী আদ্যার পীঠস্থান এই আদ্যাপীঠ। যা প্রসিদ্ধ কালীমন্দির গুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে আজ ও প্রতিনিয়ত দেবী কালী এখানে আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে পূজিতা হন। এই মন্দিরে ওঙ্কারের মধ্যে রয়েছে দেবী আদ্যার মূর্তি। তাঁর নীচে শ্রীরামকৃষ্ণের ধ্যানরত মূর্তি। আর, দেবী আদ্যার ওপরে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি।

স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী অন্নদাচরণ ইডেন গার্ডেনে ঝিলের পাশ থেকে উদ্ধার করেন আদ্যামূর্তি। পরে দেবী আদ্যার স্বপ্নাদেশে বিজয়া দশমীতে মূর্তিটি বিসর্জন দেন মাঝগঙ্গায়। স্বপ্নাদেশ মতই মূর্তিটির ছবি তুলে রেখেছিলেন তিনি। তা থেকেই তৈরি হয়েছে বর্তমান আদ্যামূর্তি। বাংলার ১৩২৫ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে স্বপ্নে সন্ন্যাস দীক্ষাও দেন।

মানুষকে প্রেম ও আদর্শে দীক্ষিত করতে ১৩৪০ বঙ্গাব্দে শুরু হয়ে, ১৩৭৫ সনের মকর সংক্রান্তিতে শেষ হয় শ্রী অন্নদা ঠাকুরের স্বপ্নে দেখা মন্দিরের নির্মাণ কার্য। আর সেই সমস্ত গল্প কাহিনী অবলম্বনে নৃত্যনাট্যের আকারে উপস্থাপন করা হয় ।

স্বয়ং সিদ্ধেশ্বর মহারাজের ১১৭ তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে এক সান্ধ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কলকাতার এক প্রেক্ষাগৃহে এদিন গোটা সন্ধ্যা জুড়ে নানা রকম সাংস্কৃতিক চর্চার সাথে সাথে আদ্যপীঠ মন্দিরের নেপথ্যে থাকা অজানা কথা কাহিনীকে মঞ্চস্থ করা হয়।

শ্রীমৎ সিদ্ধেশ্বর মহারাজের সৃষ্ট একদিন ঝুলন পূর্ণিমা লেখা নাটকের বাস্তব রূপ দেন তারই এক ভক্ত তথা সেবিকা গীতাঞ্জলি মিত্র। মূলত তার তত্বাবধানে এই দিন সম্পন্ন হয় গোটা অনুষ্ঠানটি।

দক্ষিণেশ্বর লাগোয়া বিখ্যাত এই কালী মন্দির তিন চুড়োওয়ালা তিন ধাপের মন্দির, প্রথম ধাপে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মূর্তি, মাঝের ধাপে আদ্যামা এবং সব চেয়ে উপরের ধাপে রাধাকৃষ্ণ।

সেদিন ছিল রামনবমী তিথি। অন্নদা ঠাকুর জলাশয়ে ডুব দিয়ে নিয়ে আসেন এক ১৮ ইঞ্চির আদ্যা মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তি। মূর্তি উদ্বার থেকে শুরু করে মন্দির প্রতিষ্ঠাকাল পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তই কাহিনী আকারে খণ্ড চিত্রের মাধ্যমে এই দিন একদিন ঝুলন পূর্ণিমা নৃত্যনাট্যের আকারে উপস্থাপন করা হয়। এই দিনের এই অনুষ্ঠানে বেশ কিছু বিশিষ্ট বাদ্যকারও সামিল হন। এছাড়াও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সমারহে সম্পন্ন হয় এই দিনের এই গোটা অনুষ্ঠানটি। যা দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান এদিন কলকাতার এই প্রেক্ষাগৃহে।