জন্মদিনে স্মরণঃ রা ই চাঁ দ ব ড়া ল
বাবলু ভট্টাচার্য : বিশিষ্ট ভারতীয় ধ্রুপদ শিল্পী লালচাঁদ বড়ালের কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল।
পিতার উৎসাহে ছেলেবেলাতেই গোয়ালিয়র ও রামপুরের বড় বড় সঙ্গীতজ্ঞ- ওস্তাদ মুস্তাক হুসেন খান, সরোদ বাদক ওস্তাদ হাফিজ আলি খান, মস্তি খান প্রমুখের কাছে সঙ্গীতচর্চা করার সুযোগ পেয়েছেন।
১৮ বছর বয়সে রাইচাঁদ ইণ্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানিতে যোগ দেন। পরে ১৯৩১ সালে যুক্ত হন বি এন সরকারের বিখ্যাত কোম্পানী নিউ থিয়েটার্স-এ।
বাংলা গান গজল রীতিতে গাওয়া রাইচাঁদই প্রথম শুরু করেন। নিউ থিটার্সের বিখ্যাত ছবি ‘চণ্ডীদাস’-এর সুরকার ছিলেন রাইচাঁদ। কাব্যধর্মী এই ছবির পরিচালক ছিলেন দেবকী বসু।
১৯৩৫ সালে পরিচালক নীতিন বসুর সঙ্গে রাইচাঁদ ‘ভাগ্যচক্র’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক গান ব্যবহার শুরু করেন। পরের ইতিহাস কারোরই অজানা নয় ৷ প্লেব্যাক প্রথা বাংলা বিশেষ করে হিন্দী ফিল্মের পুরো ধারাই পাল্টে দেয়। তাঁর আরেকটি বিখ্যাত ছবি হল ‘বিদ্যাপতি’।
বেশির ভাগ ছবিতে সুরকার হিসেবে তিনি একা থাকলেও, অনেক সময় তিনি অন্যের সঙ্গেও কাজ করেছেন। যেমন- ‘দেবদাস’ (১৯৩৫), ‘গৃহদাহ’ (১৯৩৬), ‘মায়া’ (১৯৩৬) ছবিতে তাঁর সহযোগী সুরকার ছিলেন পঙ্কজ মল্লিক।
১৯৪৮ সালে রাইচাঁদ নিউ থিয়েটার্স ছেড়ে দেন। পরে ১৯৫৩ সালে মুম্বাইয়ে গিয়ে বেশ কিছু হিন্দী সিনেমাতেও তিনি সুর দেন। প্রায় ৭৫ টি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন৷ তাঁর শেষ উল্লেখযোগ্য কাজ ১৯৪৮ সালে ‘অঞ্জনগড়’ ছবিতে৷ তাঁকে ‘Father of Indian film music’ বলা হয় ৷
মোট প্রায় ১৫০টি চলচ্চিত্রে সুর দিয়েছিলেন রাইচাঁদ। নির্বাক ছবির যুগে স্টেজে যে লাইভ মিউজিক থাকতো, তার পরিচালনাও করেছেন। তাঁর সুরে গান গেয়ে খ্যাতি লাভ করেছেন পাহাড়ী সন্যাল, কাননদেবী, সুপ্রভা সরকার, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, তালাত মামুদ প্রমুখ বিখ্যাত গায়ক গায়িকারা৷
তিনি ১৯৭৮ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন৷ সেই একই বছর তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়া হয় ৷
১৯৮১ সালের ২৫ নভেম্বর তিনি কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
রাইচাঁদ বড়াল ১৯০৩ সালের আজকের দিনে (১৯ অক্টোবর) ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন।