Spread the love

চলে গেলেন আঙ্কেল পার্সি আবেসেকেরা

বাবলু ভট্টাচার্য : তাঁকে বলা হতো শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের ‘মাসকট’। অনেকে ডাকেন ‘সুপারফ্যান।’ আবার কেউ কেউ বলেন ‘আঙ্কেল পার্সি’। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে গ্যালারিতে নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। সে মুখ এখন অতীত। অসুস্থতার সাথে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন লঙ্কান ক্রিকেটের ‘আঙ্কেল পার্সি’।

১৯৩৬ সালে জন্ম নেয়া পার্সি গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

 

সেই যৌবন থেকে বার্ধক্য- বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কার ম্যাচ মানেই, হাজির থাকতেন পার্সি। বয়সের ভার তাঁকে কাবু করতে পারেনি। তিনি ক্রিকেটের প্রথম সুপার ফ্যান ছিলেন। দেশে, বিদেশে যেখানেই শ্রীলঙ্কা খেলতে নামুক না কেন, হাজির হয়ে যেতেন পার্সি আবেসেকেরা।

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সেই একনিষ্ঠ সমর্থক ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন। দীর্ঘ রোগভোগের পরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট মহলে।

শুধুমাত্র পার্সি আবেসেকেরা যে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন, এমনটা নয়, তিনি গোটা বিশ্বেই অত্যন্ত পরিচিত ছিলেন। সব দেশের ক্রিকেটারদের কাছে তিনি ‘আঙ্কেল পার্সি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

এ দিন তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও। সনৎ জয়সূর্য, অর্জুন রণতুঙ্গা, কুমার সঙ্গাকারা শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের তরফেও শোকজ্ঞাপন করা হয়েছে। বার্তা পাঠিয়েছে বিসিসিআই-ও।

তারা লিখেছে, ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কায় গেলেই পার্সি যে ভাবে নিজের শক্তি, স্বতঃস্ফূর্ততা দেখিয়ে ক্রিকেটারদের কাছে ডেকে নিতেন তা অভূতপূর্ব ছিল।

১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ থেকে শ্রীলঙ্কার খেলা দেখা শুরু করেছিলেন পার্সি আবেসেকেরা। তার পর থেকে সব বিশ্বকাপ এবং বড় প্রতিযোগিতায় দেশকে সমর্থন করতে দেশে-বিদেশে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জেতার পরে সবার কাছে আরও বেশি পরিচিত হয়ে ওঠেন পার্সি। লাহোরে ফাইনালের পর শ্রীলঙ্কার পতাকা নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিলেন তিনি। বয়স বাড়লেও প্রাণশক্তি ছিল অসামান্য।

অসুস্থতার কারণে এবারের বিশ্বকাপে আসতে পারেননি। কে জানত, আর কোনও বিশ্বকাপেই আসা হবে না ‘আঙ্কেল পার্সি’র।

ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে পার্সির সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ট ছিল। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি থেকে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা তাঁকে অত্যন্ত পছন্দ করতেন। কিছু দিন আগে এশিয়া কাপে খেলতে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে পার্সির বাড়িতে ঘুরে গিয়েছিলেন রোহিত।

২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কা সফরের সময় কোহলি ভারতের সাজঘরে আমন্ত্রণ করেছিলেন পার্সিকে। বুঝিয়েছিলেন, কী ভাবে তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হন ক্রিকেটারেরাও।